বিশ্বাস নিয়ে ইসলামিক উক্তি, হাদিস, ক্যাপশন ও কথা
বিশ্বাসীরাই বিজয়ী হয়। আজকে বিশ্বাস নিয়ে ইসলামিক উক্তি, কিছু কথা এবং কোরআন হাদিসের আলোকে বিশ্বাস নিয়ে ক্যাপশন সহ আল্লাহ তায়ালার প্রতি, ইসলাম ধর্মের প্রতি এবং ভাগ্যের উপর বিশ্বাস স্থাপনের গুরুত্ব ও ফজিলত সংক্রান্ত উক্তি নিয়ে আলোচনা করব। চলুন জানা যাক –
নিজের উপর বিশ্বাস রাখো বন্ধু! তোমার দ্বারাই সবই সম্ভব। জগতে এমন কিছু নেই, যা তুমি পারবেনা। এই কথাটি মাথায় রেখেই সামনে এগিয়ে যাও সাফল্য তোমার দুয়ারে এসে ধরা দিবেই।
বিশ্বাস নিয়ে ইসলামিক উক্তি
পবিত্র কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন: ইয়া আইয়ুহাল্লাজিনা আমানু, ইসতা ইনু বিশ্ববিবাস সালাতু ইন্নাল্লাহা মায়াস সাবিরিন। অর্থাৎ হে মানুষ সকল ( তোমরা যারা ঈমান এনেছ), ধৈর্য এবং নামাজের মাধ্যমে তোমরা আমার সাহায্য প্রার্থনা করো। কারণ অবশ্যই আল্লাহ তা’আলা ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। অর্থাৎ মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে ধৈর্যশীল হওয়ার কথা বলা হয়েছে, এবং বিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ।
বিশ্বাসের সাথে মহান রবের কাছে প্রার্থনা করলে, তা কখনোই ব্যর্থ হয় না। মনে রাখবেন প্রতিটি কর্ম সম্পাদনের একটি প্রক্রিয়া রয়েছে, শুধু সময়ের ব্যাপার।
সাফল্যের সকল দরজার চাবিকাঠি হল বিশ্বাস। অর্থাৎ যার উপর ভিত্তি করেই আপনি আপনার জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করে তুলতে পারবেন।
প্রিয় বন্ধু! মহান রবের প্রতি বিশ্বাস রাখো। আল্লাহ যখন তোমার শক্তি হয়ে দাঁড়াবে, তখন কিছুই তোমাকে ভাঙতে পারবে না।
সত্যিকারের বিশ্বাস হল একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করা। যেই সত্তার কাছে কোন জিনিসই অসম্ভব নয়। তিনি চাইলে আপনাকে কাঙ্খিত সকল সাফল্য দিতে পারেন।
আপনি আল্লাহকে যত বেশি বিশ্বাস করেন, তিনি আপনাকে তত বেশি বিস্মিত করেন।
আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন নিয়ে বান্দাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন: অবশ্যই তিনি আমাদেরকে কখনো কখনো ভয়-ভীতি, কখনো ক্ষুধা অনাহার, বা জার্মানের ক্ষতিসাধনের মাধ্যমে পরীক্ষা করবেন। তবে ক্ষেত্রে আমাদেরকে অবশ্যই ধৈর্যের সাথে তা মোকাবেলা করতে হবে। এবং বিশ্বাস রাখতে হবে যে পরম করুণাময় রাব্বুল আলামিন আমাকে এই দুঃসময় থেকে মুক্তি দিবেন।
পবিত্র কুরআনুল কারীমের সূরা নাহলে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন: নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে যা কিছু রয়েছে তা সব সময় থাকবে, আর বান্দা হিসেবে মানুষের কাছে যা কিছু রয়েছে তা একসময় নিঃশেষ হয়ে যাবে। সুতরাং আল্লাহর কৃপা ও অনুগ্রহের জন্য ধৈর্য ধারণ করে তার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখতে হবে। তাহলে আমাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার হিসেবে মিলবে জান্নাত এবং দুনিয়াতে সুখ শান্তি।
স্বয়ং প্রভু তায়ালার ভাষ্যমতে, যদি আপনি ধৈর্য ধারণ করে আপনার প্রতি অন্যায়কারী মানুষদের ক্ষমা করে দেন। তাহলে মনে রাখবেন এটি একটি সাহসিকতা পূর্ণ কাজ।
লোকমান হাকিম তাঁর পুত্রকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছেন, সর্বদা নামাজ আদায় করবে। মানুষকে ভালো কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য নিষেধ করবে। এবং অনাকাঙ্ক্ষিত কোন বালা-মুসিবত এলে মহান আল্লাহর উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে ধৈর্য ধারণ করবে। নিঃসন্দেহে এটি একটি সাহসিকতা পূর্ণ কাজ।
মনে রাখবেন যখন আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবেন, তখন আপনাকে আর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। কারণ আল্লাহ তাআলা আপনার জন্য একটি উত্তম পরিকল্পনা করে রেখেছেন।
আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস তার সময়ের প্রতি বিশ্বাসের অন্তর্ভুক্ত। বিশ্বাস ভয়ের অনুপস্থিতি নয়, এতে আল্লাহর পরিকল্পনার উপস্থিতি রয়েছে।
সূরা যুমারে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, যারা আমার প্রতি ঈমান এনেছে ( অর্থাৎ বিশ্বাস স্থাপন করেছে), তারা যেন আমাকে ভয় করে। নিশ্চয়ই যারা দুনিয়ায় কোন কল্যাণকর ও ভালো কাজ করবে আখেরাতেও তাদের জন্য আল্লাহ তাআলা পুরস্কার এর ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
বিশ্বাস ভাঙ্গা নিয়ে হাদিস
মেরাজের রাতের ঘটনা উল্লেখ করতে গিয়ে আয়েশা রাজিয়াল্লাহু তা’আলা আনহাকে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আল্লাহ তাআলা বলেন কেউ যদি কারো ভেঙ্গে যাওয়া মন জোড়া লাগিয়ে দেয় তাহলে সে বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে। সুবাহানাল্লাহ। (বুখারি শরীফ)।
ঈমান হল আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাব, তাঁর রসূলগণ, শেষ দিবসের প্রতি এবং ভাগ্যের প্রতি, ভাল ও মন্দ উভয় বিষয়েই বিশ্বাস করা।” – হযরত মুহাম্মদ (সা.)
তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী সেই যে তার রাগকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং আল্লাহকে বিশ্বাস করে। – হযরত মুহাম্মদ (সা.)
বিশ্বাস নিয়ে কিছু উক্তি
বিশ্বাস হল সেই পাখি যে আলো অনুভব করে এবং যখন ভোর অন্ধকার থাকে তখন গান গায়। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বিশ্বাস হল ওয়াই-ফাই এর মত; এটি অদৃশ্য কিন্তু এটিতে আপনার যা প্রয়োজন তার সাথে সংযোগ করার ক্ষমতা রয়েছে।
ক্ষমা ও ভালোবাসা অর্জনের চেয়ে বিশ্বাস অর্জন করা কঠিন। যে বিশ্বাস করতে পারে, সে অর্জন করতেও পারে। এটি চিরন্তন সত্য।।
সত্যিকারের বিশ্বাস সবসময় ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে। তবে এর ফলাফল যদিও জাদুর মত, কিন্তু এই বিশ্বাসটুকুই সময় নিয়ে মানুষের মাঝে গড়ে তুলতে হয়।
বিশ্বাস হল সেই শক্তি যার দ্বারা একটি ছিন্নভিন্ন পৃথিবী আলোয় উদ্ভাসিত করা সম্ভব।
বিশ্বাস সব কিছু সম্ভব করে তোলে। প্রেম সব কিছু সহজ করে দেয়।
বিশ্বাস অর্জন করার জন্য তোমাকেও বিশ্বস্ত হতে হবে, এটা ছাড়া আর কোন বিকল্প পথ নেই।
বিশ্বাসের কারণেই আমরা এক পায়ের পর আরেক পা সামনে বাড়াই। কেবলমাত্র বুদ্ধিমান মানুষরাই বুঝতে পারে কাকে সে বিশ্বাস করবে এবং বন্ধু বানাবে।
মানুষ মাত্রই আমরা একটা অনিশ্চিত জগতে বাস করি। আপনি কখনোই এমনি এমনি বলে দিতে পারবেন না যে একজনকে আপনি বিশ্বাস করতে পারেন, বরং তার প্রতি আপনার বিশ্বাসটা অর্জন করতে হবে।
আল্লাহর উপর ভরসা রেখে নিজেকে বিশ্বাস করো। যদি ভয়ও হয়, তবুও নতুন কিছু চেষ্টা করার সময় কখনো পিছিয়ে যেও না। আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠো।
বিশ্বাস নিয়ে ক্যাপশন
নিজের উপর বিশ্বাস রাখার নামই একজন মানুষ আত্মবিশ্বাসী। আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিরা বিশ্বাস করে যে নিজের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তার রয়েছে।
বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে কোন দল গড়ে উঠলে তার সুফল সুদূরপ্রসারী হয়। পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করার মাধ্যমে দলের সব সদস্যকে তাদের পুরোটা দিয়ে কাজ করতে উৎসাহ যোগায়। এবং সে উদ্যোগে অবশ্যই তারা সফলকাম হয়।
বিশ্বাস করতে হলে এমন কাউকে বিশ্বাস করো, যার মধ্যে ন্যায়-নীতি ও নিষ্ঠা আছে। যার মুখের কথা ও হাতের কাজ এ মিল আছে।
বিশ্বাস অর্জন করতে চাইলে স্পষ্টভাবে মানুষের সামনে কথা বলুন। এমন ভাবে যেন মানুষটা সহজেই বুঝতে পারে।
সত্য কথা বলে শয়তানকে অপমান করা যায়। একজন ভালো বন্ধু ও ভালো মানুষ হওয়ার প্রথম শর্ত হলো বিশ্বাসী হওয়া।
নিজেকে পুরোপুরি বিশ্বাস করতে গেলে প্রথম প্রথম তো একটু ভয় করবে। কিন্তু জীবনের জন্য এই বিশ্বাসী হওয়াটাই খুবই জরুরী।
সম্পর্কিত পোষ্ট: সত্য কথা বলার সুফল। সত্যবাদিতার সুফল ও উপকারিতা গুলো কি কি?
আশা করি আমাদের সংগৃহীত বিশ্বাস নিয়ে ইসলামিক উক্তি গুলো আপনার হৃদয় ছুঁয়েছে। আমাদের উচিত সর্বদা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখা, ব্যক্তি হিসেবে মানুষের প্রতি মানুষের বিশ্বাস অর্জন করা এবং বিশ্বাসকে কখনো ঘাতকতায় ফেলে চূর্ণ না করা। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে মুমিন তথা বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আমীন।।