সত্যিকারের ভালোবাসা নিয়ে কিছু কথা। (Love Caption) ক্যাপশন
কিছু মানুষকে ভালোবেসে কখনো পাওয়া যায় না, আবার অনেকেই হারানো ভালোবাসাকে ফিরে পায়। সেই রকমই বাস্তবতা আঙ্গিকে সত্যিকারের ভালোবাসা নিয়ে কিছু কথা ও ভালোবাসা নিয়ে ক্যাপশন জানতে, সম্পূর্ণ ফিচার আর্টিকেলটি পড়ুন। ছেলে ও মেয়েদের ভালবাসা নিয়ে আলাদা আঙ্গিতে কিছু কথা বলবো; আশা করি শিক্ষনীয় রূপরেখার উপর ভিত্তি করেই লেখাগুলো পড়বেন।
ভালবাসা মানে কি?
প্রত্যেকটি মানুষের ব্যক্তি জীবনে মনের ভিতর কিছু অনুভূতি থাকে। সেই অনুভূতিগুলো যদি অন্যের জন্য, যত্নশীলতা ও গুরুত্বারুপ তার ওপর প্রবলভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাহলে তাকে বলা হয় ভালোবাসা।
এছাড়া এভাবেও ভালোবাসার সংজ্ঞা দেওয়া যায় যে, কোন জিনিসের প্রতি যখন আপনি আগ্রহীশীল হয়ে উঠবেন। অর্থাৎ সেই জিনিসটিকে আপনি নিজের মধ্যে ধারণ করতে চাইবেন, বা, অথবা সেটা নিয়ে বাঁচতে চাইবেন। এই সকল বিষয়গুলোকে মূলত আমরা ভালোবাসা বলে থাকি। এক কথায় যার প্রতি আমাদের অনুভূতি এবং আকাঙ্ক্ষার জন্ম নেয় তাহাই হলোঃ Loves বা “ভালোবাসাঃ।
বাস্তব জীবনে ভালোবাসা কি?
উল্লেখিত সংখ্যা থেকে যা বুঝলাম ভালোবাসা তো মূলত অন্য একটি বস্তুবাদ বিষয়ের প্রতি মনোনিবাস এবং অনুভূতির রূপরেখা। তো এবার জানা যাক বাস্তব জীবনে ভালবাসার মানেটা কি!
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়ঃ একটি রেস্টুরেন্টে এক বৃদ্ধ চাচা বসে খাবার খাচ্ছিল। তার পাশের টেবিলে বসে একজন যুবক চাচাকে উল্লেখ করে বলতে শুরু করলো, চাচা আপনি কি খাচ্ছেন? বৃদ্ধ কাকা উত্তরও বললেন আমি মাছ খাচ্ছি।
অতঃপর যুবক ভাইটি বৃদ্ধ কাকাকে বললঃ আপনি কেন মাছ খাচ্ছেন? চাচা উত্তর দিল কারণ আমি মাছ খেতে ভালোবাসি।
তখন যুবকটি মুচকি হাসি দিয়ে বললঃ আপনি মাছ খেতে ভালোবাসেন! তাই আপনি পুকুর থেকে মাছ ধরে কেটে রান্না করে খাচ্ছেন? তখন বৃদ্ধ কাকু চুপ হয়ে গেল।
পরক্ষণে যুবকটি বললঃ আপনি আমাকে এটি বলবেন না যে, আপনি মাছ ভালবাসেন। বরং আপনি নিজেকে ভালবাসেন, এবং আপনাকে ভালো রাখার জন্য মাছ পানি থেকে ধরে এনে রান্না করে খাচ্ছেন।
প্রিয় বন্ধু! ভালোবাসার প্রকৃত সঙ্গ টা সেই মাছের সাথে ভালোবাসার মতোই অনেকটা সাদৃশ্যপূর্ণ। অর্থাৎ একজন যুবক যখন যুবতীর প্রেমে পড়ে, তখন যুবকটি ওই নারীর মধ্যে এমন কিছু নারীত্বের বৈশিষ্ট্য খুঁজে পায় ও আবিষ্কার করেঃ যার ফলে যুবকটি মনে করে যে সেই যুবতীর মধ্যে তিনি যাবতীয় শারীরিক এবং মানসিক শান্তি লাভ করতে পারবেন।
অপর পক্ষে যুবতী ও, এই যুবকটির মধ্যে এমন একটি পুরুষত্ব আবিষ্কার করেছেন। তার ব্যাপারে মনের মধ্যে ছন্দ লিখতে পারে, নিজের শারীরিক এবং মানসিক চাহিদাগুলোকে মিটানোর জন্য তাকে সে পারফেক্ট মনে করেছিল।
আমি বলব না যে এটা কি কোন ভালোবাসা বলা হয় না; বরং বলতে পারেন প্রেম পরিণতির মধ্য থেকে যে ভালোবাসাটা আসে ঠিক এরকমই একটি ভালো ভাষাভাষী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাদের দুজনের হৃদয়ে। অর্থাৎ দুজনেই পরস্পরের মধ্যে নিজেদের প্রয়োজনকে খুঁজে পেয়েছে।
সত্যিকারের ভালোবাসা নিয়ে কিছু কথা তো বলতেই হয়! সেই মারফতেই বলছি হয়তো…। প্রকৃতপক্ষে এটাকে অন্যের জন্য ভালোবাসা বলা হয় না। এখানে আমার বিপরীত পাশের মানুষটি আমার পরিতৃপ্তির একটি বাহন হয়ে পড়ছে।
মুদ্দা কথা হল, আমরা যাকে ভালোবাসাবাসি বলি। তা ঠিক মাছ ভালোবাসার মত। অর্থাৎ নিজেকে ভালোবাসি এবং নিজেকে ভালো রাখার জন্যই অন্যকে ভালো লাগা থেকে, নিজের প্রয়োজনে ভালবাসি।
সত্যিকারের ভালোবাসা নিয়ে কিছু কথা
সত্যিকারের ভালোবাসা এমন হওয়া উচিত না যে, বিপরীত পাশের মানুষটার কাছ থেকে আমি কিছু নিতে চাচ্ছি। বরং এমন হওয়া উচিত যেঃ আমি তাকে দিতে যাচ্ছি। অর্থাৎ ত্যাগ ও বিসর্জনের মধ্যেও ভালোবাসাকে খুঁজতে হয়। শুধু সুসময়ে আমি তার পাশে থাকব, এরকমটা নয়। বরং যে কোন পরিস্থিতিতে দুখ ও কষ্টের সময়গুলোতেও তার সঙ্গে একসাথে পথ চলতে হবে।
তাকে সাহস যুগিয়ে তার অনুপ্রেরণার মাঝে নিজের ভালোবাসাকে প্রস্ফুটিত করে সামনে এগুলোর জন্য এক ধাপ এগিয়ে দিতে হবে। সেটাকে প্রকৃত অর্থে সত্যিকারের ভালোবাসা বলা যায়।
ইংরেজি সাহিত্য উপন্যাসে পড়েছিলাম; একজন মহাজ্ঞানীই রাবায়ে ছিলেন। তার নাম রাওয়াই ডেসলার। মানুষ এই কথাটি ভেবে ভুল করে যে, তারা নিজেদেরকে উজাড় করে দেয় তার বিপরীত পাশের মানুষটাকে ভালো রাখার জন্য। সত্যিকার অর্থে, তারা তাদেরকেই ভালোবাসে। যাদেরকে তারা উজাড় করে দেয়।
তার চাকুষ যুক্তি হলোঃ ধরুন আপনাকে যদি আমি কিছু দেই। তাহলে আপনার মধ্যে আমি নিজেকে অর্পিত করছি। যেহেতু আত্মপ্রেম পৃথিবীর সর্বজন স্বীকৃত! প্রত্যেকেই নিজেকে এবং নিজেদের জীবনকে ভালোবাসে।
যেহেতু আমার জীবনের একটা অংশ আপনার জীবনের অংশে পরিণত হয়েছে; তাই আপনার ভিতরে আমার এমন কিছু অংশ রয়েছে, যেটা আমি অনেক ভালবাসি। সুতরাং সত্যিকারের ভালোবাসা হলোঃ দেওয়ার ভালোবাসা। আমার ভালোবাসাবাসি নয়।
সত্যিকারের ভালোবাসা নিয়ে কিছু বাস্তববাদী কথা
আচ্ছা কয়জন ছেলে, বুকে হাত রেখে বলতে পারবে! আত্মার গার্লফ্রেন্ড ধ*র্ষ*ণে’র শিকার হলেও সে তাকে বিয়ে করতে রাজি হবে? আছে এটা বলতে পারোঃ কয়জন মেয়ে বুকে হাত রেখে বলতে পারবে যে, আর বয়ফ্রেন্ড সড়ক দুর্ঘটনায় একটা হাত-পা হারালেও তাকে বিয়ে করতে রাজি হবে?
এ দুটো বিষয়ের উপর পার্থক্য করতে পারলেই; ভালোবাসা আর রিলেশন বা সম্পর্কের মধ্যকার তফাৎ গুলো বের হয়ে যাবে।
খারাপ কিছু ঘটে গেলে, সেই মানুষটাকে নিয়ে যদি আপনার লড়াই করে জীবনে বেঁচে থাকার ও টিকে থাকার মানসিকতা না থাকে, তবে বুঝে নিবেন এটা আপনার ভালোবাসা নয়। বরং সেটা শুধুই সম্পর্ক বা রিলেশন মাত্র, যা সময়ের ব্যবধানে একটা সময় ঠিক ফুরিয়ে যাবে। সবকিছু অতীত হয়ে যাবে।
তো যা যাক রিলেশনটা কি? রিলেশন হচ্ছে আপনি দশ জনকে বেছে নিয়ে একজনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়লেন, অবশ্য তাকে আপনার জীবনে গ্রহণ করা যায় কিনা সেরকম গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনা করার পরেই তার সঙ্গে আপনি সম্পর্ক গড়তে রাজি হয়েছেন। আর দুর্ভাগ্যবশত তার গ্রহণযোগ্যতা কমে গেলে আপনিও তার জীবন থেকে হারিয়ে যাবেন। এটাকে ভালোবাসা বলে না, এটা শুধুই মাত্র রিলেশন।
ভালবাসা নিয়ে কিছু কথা
![(Love Caption) সত্যিকারের ভালোবাসা নিয়ে কিছু কথা।](/wp-content/uploads/2023/05/Love-Caption-সত্যিকারের-ভালোবাসা-নিয়ে-কিছু-কথা।-1024x576.jpg)
তবে সত্যি কারের ভালোবাসার মধ্যে গ্রহণযোগ্যতার অগ্রহার যোগ্যতার মধ্যে কোন কিছুই যায় আসে না। কি বুঝলেন না কি বুঝাতে চাইলাম? তাহলে চলুন আর একটু বুঝিয়ে দেই!
ছেলে মেয়ে দুজনের সম্মতিতেই আপনারা রিলেশন বা প্রেম সম্পর্কে জানালেন। ছেলেটি এখনো বেকার, এদিকে মেয়েটির পরপর বিয়ের সম্পর্ক আসছে আর ভাঙছে। বলতে পারেন মেয়েটি ইচ্ছে করেই যে কোন অজুহাত দেখিয়ে বারবার বিয়ে ভেঙে দিচ্ছে। রাত জেগে চিন্তায় চোখের নিচে কালো সিট দাগ হয়ে গিয়ে; মেয়েটি এখন দিব্যি রাত জাগা ক্লাউন। হ্যাঁ ভাই বিশ্বাস করেন! এটাকে ভালোবাসাই বলে।
আরেকটু যদি বুঝিয়ে বলি! ধরেন আপনারা বয়ফ্রেন্ড এবং গার্লফ্রেন্ড দিব্যি সুখে আছেন, অনেক ভালো আছেন। এদিকে বারবার সুন্দরী মেয়েদের প্রস্তাব ও ভালোবাসার প্রপোজাল ফিরিয়ে দেওয়া এবং ছেলেটি তার কালো বেটে খাটো প্রেমিকার মাঝেই সুখ খুঁজে পাচ্ছি। তাকে ছাড়া আর অন্য কারো কথা কল্পনাই করতে পারেনা। এটাকে ভালোবাসা বলে…।
ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে কিছু কথা
জীবনের তালপাকানো ঘূর্ণিঝড় এসে, সময়ের ব্যবধানে সংসারী সমিতি এখন জেল খাটছে। প্রতিদিন সাক্ষাৎ করতে দিবে না জেনেও, স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য সেই সকাল থেকে স্ত্রী গেটে অপেক্ষা করছে। এটা ভালোবাসা…।
মেয়েদের ভালোবাসা নিয়ে কিছু কথা
বন ও ম্যাচথায় কালো হয়ে বউয়ের চেহারাটা আর চেনাই যায় না! তারপরও তার স্বামীর কাছে মেয়েটি রূপকথার রাজকন্যা। সত্যি বলছি, এটাই ভালোবাসা…।
ভালোবাসা নিয়ে ক্যাপশন
রিলেশনে জড়ানো টা না; আজকাল অনেক সস্তা ও সহজ ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। আজ প্রপোজ করা, কাল রিলেশনের স্ট্যাটাস দেওয়া। পরশুদিন ঘুরতে যাওয়া, সোশ্যাল মিডিয়াতে যুগল ছবি আপলোড দেওয়া। পিকচারের সাথে নানারকমের রোমান্টিক ক্যাপশন যোগ করা…। এমনকি কথায় কথায় আই লাভ ইউ বলা এগুলো আজকাল সবাই পারে। দ্যাট ইজ কমন ডায়লগ, ম্যান!
কিন্তু প্রকৃত কথা হলো, ভালবাসতে সবাই পারেনা। সবাই ভালোবাসা কি তা জানে না।
কারণ যেখানে ভালোবাসা আছে, সেখানে নিজের মধ্যে একটা অনেস্ট Commitment আছে। আর তাই তা হল, যাই হোক না কেনঃ মানুষটাকে নিয়ে লড়াই করে, অন্তত একসাথে শেষ টুকু দেখা।
তাই পরিশেষে, সত্যিকারের ভালোবাসা নিয়ে কিছু কথা ও পরামর্শ বলতে চাই যে; নিজের প্রিয় ভালোবাসার মানুষটাকে সততার সাথে মন থেকেই ভালোবাসুন। নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে একটু বোঝার চেষ্টা করুন। তার প্রতি যত্নশীল হোন। তাহলে দেখবেন আপনার সম্পর্কটা আগের চাইতে অনেক বেশি মজবুত হয়ে গিয়েছে। ভালো থাকুন সর্বদা ভালোবাসার মানুষটিকে সাথে নিয়ে।