সমাজের কিছু বাস্তব কথা। সুশীল সমাজ নিয়ে উক্তি ও বাস্তবতা
মানুষ সামাজিক জীব! তবে সমাজের কিছু বাস্তব কথা রয়েছে, যা আপনার সফলতার পথে পিছুটানে ঠাট্টা করবে। আপনি উপরে উঠতে চাইলে নিচের টেনে হেঁচড়ে দমিয়ে রাখতে চাইবে, এই আর্টিকেলে সেরকমই কিছু সমাজের সত্য কথা তুলে ধরলাম। যা জানার পর আপনার ধারনাটাই পাল্টে যেতে পারে। জীবন নিয়ে সামাজিক এই কঠিন বাস্তব কথাগুলো, আপনার ভবিষ্যৎ জীবনে চলার পথে একান্তভাবে প্রয়োজন হবে বলে আশা করি।
চরম বাস্তব কিছু তেতো কথা
কোন কথার সঠিক জবাব মুখের উপর দিলে, এ সমাজ আপনাকে বেয়াদব বলবে। আপনি যদি উচ্চস্বরে কথা না বলে নমনীয়ভাবে আচরণ করেন, সমাজ আপনাকে ভদ্র ভাবার বিপরীতে দুর্বল ভাববে। জীবনের সফলতার মোড় সামনের দিকে এগোতে থাকলেই সমাজের লোকেরা আপনার প্রতি হিংসা করতে থাকবে। সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধিতে হাসোজ্জ্বল থাকলে কিভাবে আপনাকে কাঁদানো যায় সমাজ সেটা নিয়েই ব্যস্ত থাকে।
আমাদের এই হাস্যকর সমাজের চরম বাস্তব কিছু তেতুকথা হলো, উপর দিয়ে ভালোবাসার অভিনয় করে ভিতর দিয়ে ছুরি মারা লোকগুলোকে এই সমাজ সম্মান করে। মাথায় যেনো, মুকুট পরিয়ে রাখে। আজকালকার সমাজে উচিত কথার কোন দামই নাই!
যেই লোক দশ জনের হক মেরে খায়, এ সমাজে তার কদর অনেক বেশি। সমাজ তাকে মূল্যায়ন করতে জানে ঠিকই। কিন্তু আপনি যদি কারো হক নষ্ট হওয়া থেকে প্রতিরোধ করেন, তাহলে আপনি হবেন সমাজের চোখের কাঁটা।
নির্মম ও তীক্ত সত্য কথা হলোঃ এই সমাজ বেশিরভাগ সময় খারাপ মানুষদের পাশে থাকে, আজকালকার সমাজ ব্যবস্থায় ভালো মানুষ গুলো বরাবরের মত তুচ্ছ ও অবমূল্যায়নের শিকার হচ্ছে। সমাজের বাস্তবতা এতটাই কঠিন হয়ে গিয়েছে যে আপনার বিপদে পাশে না থেকে বরং বিপরীতে থাকাটাই বেশ পছন্দ করবে।
সৌন্দর্য ও মহিমান্বিত সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদেরকে সৎ ও সুশীল হতে হবে। সত্যিকার অর্থে সভ্য ও ভদ্র হতে হবে। কারণ সব মেয়েই চায় তার স্বামী শুধু তাকে সময় দিবে, বিয়ের পর সর্বদা তাকে নিয়েই ভাববে। কিন্তু একবারও সে ভাবে না যে অতীতে তো সে একাধিক ছেলের সাথে সময় নষ্ট করেছে। মানে নিজের বেলায় ষোল আনা, আর অন্যের বেলায় শূন্যতাকেই প্রাধান্য দেয়।
সমাজের কিছু বাস্তব কথা
আপনার জীবনে সফল হতে চান, ছুড়ে ফেলুন সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে। লোহার শিকলে বেধে ফেলুন সমাজের কুৎসা ও তিরস্কারকে। কারণ এই নর্দমাই সমাজ আপনাকে উপরে উঠছে নয় বরং নিচে টেনে হেঁচড়ে নামাতেই ব্যস্ত থাকে। সবসময় সমাজের লোকেরা এ কথা মাথায় ঠিকই রাখে, কিন্তু যখন সাহায্যের প্রয়োজন হয় তখন সকলেই পিছনে হটে যায়।
প্রাণশি দেখা যায় সমাজের কিছু মানুষরূপী হিংস্র খেতদের জন্য, ভদ্র ও সভ্য ও সত্যিকারের ভালো মানুষেরা কখনো কখনো আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আজকে আপনি একটি কাজে সফল হুন্নি কিংবা পরীক্ষায় পাস করেননি সমাজ আপনাকে পরবর্তীতে পাস করবেন বা হারবেন না এরকম কোন উৎসাহ না দিয়ে বরং তিরস্কার করবে, আপনাকে আত্মহননের দিকে ধাবিত করার চেষ্টায় ব্যস্ত থাকবে।
ধিক এই সমাজকে; এড়িয়ে চলুন সমাজ ব্যবস্থাকে। কারণ যে সমাজ আপনাকে ভালো মন্দের মধ্যে পার্থক্য করে সৎ ও উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে না, যে সমাজ বিপদের সময় আপনার পাশে সুপরিচিত বন্ধুর মতো দাঁড়াবে না। সেই সমাজ ও ব্যবস্থাকে নিয়ে আপনি সামনে এগোতে পারবেন না। বরং একশ্রেণীর অসাধু ব্যক্তিবর্গ আপনাকে পিছনে টেনে হেঁচড়ে ধরবে, আপনার কল্যাণ ও মঙ্গল হোক এটা তারা কখনোই চাইবে না। দূরে থাকবেন ও সাবধান হোন এ ধরনের অসৎ মানুষ থেকে।
আমাদের সমাজের কিছু বাস্তব কথা এরকম হয়ে থাকে যে, আপনি যাকে ভালবাসলেন যার জন্য আপনার সারাটা জীবন আপনি দিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু যদি আপনি একদিন তাকে দিতে না পারেন, একবার যদি সে আপনার কাছে স্বার্থ না পায়, চরম বাস্তবতা হলো দেখবেন সে আপনাকে চিনবে না।
আজকালকার সমাজ এত নিচু পর্যায়ে নেমে গিয়েছে যে, কিসের আত্মীয়-স্বজন; কিসের ভাই বোনের সম্পর্ক; কিসের পিতা-মাতা বা সন্তানের হৃদয় বন্ধন কিংবা স্বামী স্ত্রীর কিসের ভালোবাসা! কিসের অফিসের সহকর্মী কিংবা বন্ধু বান্ধবের সম্পর্ক? সবাই আজকাল যে যার স্বার্থকতা নিয়ে ব্যস্ত আছে। কিন্তু মনে রাখবেন শুধুমাত্র একজন সত্তা সব সময় বিদ্যমান আছে, যিনি কখনো আপনার কাছে স্বার্থ চায় না! তিন হরেন একমাত্র মহান রব্বুল আলামীন।
সমাজের এই অধঃপতনের যোগে, শান্তি ও মুক্তি পেতে শুধুমাত্র একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করুন। আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূলের হাদিস মোতাবেক যাকে বিশ্বাস করা উচিত তাকে বিশ্বাস করুন। যার সঙ্গে জীবন পথে চলা উচিত তার সঙ্গেই হাঁটুন। যাকে নিয়ে একসাথে বেঁচে থাকার ভরসা করা যায় কোরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক, তার সঙ্গেই জীবন যাপন করুন। আর বাকি সবাই স্বার্থপর, তাদের স্বার্থকতা থেকে সর্বদা সচেতন ও সাবধান থাকুন। দেখবেন জীবনে আপনাকে কেউ আর দমিয়ে রাখতে পারবে না, আপনার সাফল্য আসবেই।
সমাজের বাস্তব চিত্র নিয়ে উক্তি
বর্তমান সমাজ ও সমাজের বাস্তব চিত্রটা ঠিক এরকম যে, অসৎ মানুষদের মূল্যায়ন হয় ঠিকই। কিন্তু সৎ ও ভালো মানুষদের অবহেলা করা হয় প্রতিনিয়ত। যে দুধ বিক্রি করে সে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে, অথচ যে মত বিক্রি করেঃ মানুষ তার দুয়ারে ঘুরে বেড়ায়। সমাজের চরম বাস্তবতা কি রকম পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে!
আমাদের সুশীল সমাজটা এমন হয়ে গিয়েছে যে, দুধওয়ালা যদি দুধের সাথে জল মেশায় তাহলে গালি দেয়। অথচ সেই লোকেরাই মদের সঙ্গে জল মিশিয়ে খায়।
আজকালকার দুনিয়ায় মানুষকে বাঘ কিংবা সিংহের সাথে তুলনা করলে লোকজন খুশি হয়ে যায়। তবে জন্তু বললে মানুষের রাগ হয়, আরে ভাই! বাঘ সিংহ কি তবে জন্তু নয়? মানুষের জীবন যাপন আজ যেন কেমন উল্টোপাল্টা হয়ে গিয়েছে। ভোরে ঘুম থেকে উঠে খুবই ভালো কিন্তু মানুষ সেটা আর করতে চায় না, অথচ রাত জাগা যতই খারাপ মানুষ সেটাই বেশি করে।
আজকের এই শিক্ষিত সমাজে অবৈধ পথে র সমৃদ্ধশালি হওয়া ধনী মানুষ সমাজে উচ্চ সম্মানের পর্যায়ে স্থান পায়, আর বৈধ পথে স্বল্প আয়ের মানুষগুলো সমাজে অসম্মান অপমান ও লাঞ্ছনার শিকার বহন করছে প্রতিনিয়ত।
সমাজের বাস্তবতা এমন চরম শিখরে পৌঁছে গিয়েছে যে, মোমবাতি জ্বালিয়ে মানুষ মৃত্যুকে স্মরণ করে। কিন্তু মোমবাতি নিভিয়ে মানুষ জন্মদিন পালন করে। হায়রে মানুষ হায় সমাজব্য।
পড়তে পারেনঃ সেরা ৪ টি মেয়ে পটানোর নিঞ্জা টেকনিক ও টিপস।
ইদানিং সবাই নগ্ন ছবি দেখতে পছন্দ করে, কিন্তু যে নগ্ন হয় তাকে সবাই ঘৃণা করে। মানুষ পতিতালয়কে নয় বরং পতিতাদের ঘৃণা করে। অথচ সেই পতিতাদের কাছে মানুষ চলে যায়, নিজের অর্থ সম্পদ বিলিয়ে দেয় তাদের সঙ্গে আমুদ ফুর্তি করার জন্য।
সুশীল সমাজ নিয়ে উক্তি
আমাদের সুশীল সমাজ ব্যবস্থা না এমন হাস্যকর হয়ে গিয়েছে যে, দেখা যায় গরিবের ঘরের গেটে লেখা থাকে স্বাগতম! অপরপক্ষে ধনী ব্যক্তির বাড়ির গেটে লেখা থাকে কুকুর হইতে সাবধান। মানে আপনাকে সুস্বাগতম জানানোর আগেই সে কুকুর পাহারাদার হিসেবে রেখে দিয়েছে। আরে ভাই অর্থের সবসময় গরিব থাকুন কিন্তু মন থেকে অন্তত ধনী থাকতে হোক শিখুন।
হে সুশীল সমাজ! মনে রেখো পাখি জীবন্ত অবস্থায় পিপড়ে কে খেয়ে নেয় ঠিকই। কিন্তু পাখি মৃত্যুবরণ করলে পিঁপড়ে পাখিকে খায়। সাবধান হও কারণঃ সময় এবং পরিস্থিতি যেকোনো সময় বদলাতে পারে। আজকে তোমার সুসময় থাকলে, কালকে নাও থাকতে পারে। আজকে আমার দুঃসময় দিন অতিবাহিত করা লাগতে পারে, কিন্তু চিরকাল দুঃখ কষ্ট মানুষের জীবনে থাকে না।
আজকালকার শিক্ষিত ও সুশীল সমাজের লোকেরা এমন হয়ে যাচ্ছে যে, একজন মা’ তার সন্তানকে জন্ম দেওয়ার জন্য তার সৌন্দর্য্য কে বিসর্জন দেয়। অপরপক্ষে সেই সন্তান বড় হয়ে, তার সুন্দরী বউয়ের জন্যই তার “মা”কে ত্যাগ করে। হায়রে পতিত সমাজ!
সমাজের মানুষগুলো শিক্ষিতের নামে অশিক্ষিতের মতো কর্মকাণ্ড করে বেড়ায়! অনেককে দেখা যায় ময়লা আবর্জনা সৃষ্টি করে মানুষজনই; অথচ যে সব মানুষ এই ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করে, সে সকল ঝাড়ুদার ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কর্মী মানুষদেরকে তারা ঘৃণা করে।
যে কৃষকের হাড় ভাঙ্গা খাটনির ফলে ধনীদের পেট পড়ে তিন বেলা আহার জুটার ভাগ্য হয়! দিনশেষে সেই কৃষকদেরকেই ধনীদের কাছে অপমান ও লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়। ধিক্কারে জানাই এই সমাজ ও সুশীল ব্যবস্থাকে।
সবশেষে একটি কথাই বলবো, সামাজিকতার মাঝে নিজের অধঃপতন দেখতে না চাইলে উপরে উল্লেখিত সমাজের কিছু বাস্তব কথা ও উক্তিগুলো কে মেনে চলবেন। এবং পদক্রমে সচেতন থাকবেন, সর্বদা অন্ধবিশ্বাস করবেন না। চাটুকারীদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখবেন। পরিশেষে নিজে ভাল থাকুন, সবকিছুতে স্বার্থ না খোঁজে অন্যকেও ভালো রাখুন। পৃথিবীর সামাজিক নিয়মগুলোর পরিবর্তন আনুন। ধন্যবাদ।।